কবুতরের বাচ্চার খাদ্য :
ডিম ফুটে বাচ্চা বের হওয়ার কমপক্ষে ৪-৫ দিন পর কবুতরের বাচ্চার চোখ ফোটে। এ সময়ে বাচ্চাগুলো কোনো দানাদার খাদ্য গ্রহণ করতে পারে না। এ সময় স্ত্রী এবং পুরুষ কবুতর তাদের পাকস্থলী (ক্রপ) থেকে ঘন ক্রিম বা দধির মত নিসরণ করে যাকে কবুতরের দুধ বলে। এ দুধ অধিক আমিষ, চর্বি এবং খনিজ লবণ সমৃদ্ধ খাদ্য যা খেয়ে কবুতরের বাচ্চা বড় হয় এবং এক সপ্তাহ পর্যন্ত খেতে পারে। বাচ্চাগুলো যখন বড় হতে থাকে স্ত্রী এবং পুরুষ কবুতর উভয়ে দানাদার খাদ্যের সাথে দুধ মিশিয়ে ঠোঁট দিয়ে বাচ্চাদের খাওয়ায়। বাচ্চা বড় হয়ে নিজে খাদ্য গ্রহণ না করা পর্যন্ত এভাবে স্ত্রী ও পুরুষ কবুতর খাবার খাওয়াতে থাকে ।
প্রাপ্ত বয়স্ক কবুতরের খাদ্য:
কবুতরের জন্য তৈরিকৃত খাদ্য শর্করা, আমিষ, খাদ্যপ্রাণ বা ভিটামিন, চর্বি এবং খনিজ লবণ সমৃদ্ধ সুষম খাদ্য হতে হবে। কবুতর দানাদার জাতীয় খাদ্য বেশি পছন্দ করে, ম্যাশ বা পাউডার জাতীয় খাদ্য অপছন্দ করে। ছোট আকারের কবুতরের জন্য ২০-৩০ গ্রাম, মাঝারি আকারের জন্য ৩৫-৫০ গ্রাম এবং বড় আকারের জন্য ৫০-৬০ গ্রাম খাদ্য প্রতিদিন দিতে হবে। দানাদার জাতীয় খাদ্যের মধ্যে গম, ধান, ভুট্টা, সরগম, ওট শতকরা ৬০ ভাগ এবং লেগুমিনাস বা ডাল জাতীয় খাদ্যের মধ্যে সরিষা, খেসারি, মাশকলাই শতকরা ৩০- ৩৫ ভাগ সরবরাহ করতে হবে। কবুতরের ভিটামিন সরবরাহের জন্য বাজারে প্রাপ্ত ভিটামিন ছাড়া সবুজ শাকসবজি, কচি ঘাস সরবরাহ করা প্রয়োজন। প্রতিদিন ২ বার খাদ্য সরবরাহ করা ভালো। মাঝে মাঝে পাথর, ইটের কণা (গ্রিট) এবং হলুদের টুকরা দেয়া উচিত । কারণ এ গ্রিট পাকস্থলীতে খাবার ভাঙতে এবং হলুদ পাকস্থলী পরিষ্কার বা জীবাণুমুক্ত রাখতে সাহায্য করে। খনিজ উপাদানের জন্য বোন মিল, ঝিনুকের গুঁড়া, লাইম স্টোন মিশ্রিত খনিজ খাদ্য উপাদান ৩-৫% সরবরাহ করতে হবে। এই মিশ্রণ ডিম, ডিমের খোসা শক্ত করা ও ভাল হ্যাচাবিলিটির (Hatchability) জন্য অতীব প্রয়োজন ।
কবুতরের সুষম রেশন তৈরি:
কবুতরের খাদ্যের মধ্যে প্রায় ২২-২৫% প্রোটিন এবং ৩০০০-৩২০০ কিলোক্যালরি শক্তি থাকতে হয়। ডিম উৎপাদন ও ডিমের খোসার গঠন এবং হ্যাচাবিলিটি বৃদ্ধির জন্য গ্রীট জাতীয় খাদ্য উপকরণ ও সুষম খাদ্যে সংযুক্ত করতে হবে। সে হিসাবে কবুতরের সুষম খাদ্য তৈরির জন্য নিম্নলিখিত উপকরণ ব্যবহার করা হয়।
শ্রেণির তাত্ত্বিক কাজ
কবুতরের ১০ কেজি খাদ্যের একটি রেশন তৈরি কর যার মধ্যে ২২-২৫% প্রোটিন এবং ৩০০০- ৩২০০ কিলোক্যালরি শক্তি থাকবে।
কবুতরকে পানি সরবরাহ
প্রতিদিন পানির পাত্র ভালোভাবে পরিষ্কার করে কবুতরকে দিনে ৩ বার পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ও বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা উচিত। কবুতর যেহেতু ঠোঁট প্রবেশ করিয়ে ঢোক গেলার মাধ্যমে পানি পান করে সেহেতু পানির পাত্র গভীর হওয়া উচিত। দুই সপ্তাহ পর পর হালকা পটাশ মিশ্রিত পানি সরবরাহ করলে পাকস্থলী বিভিন্ন জীবাণুর আক্রমণ থেকে রক্ষা পাবে।